অমনিট্রিক্স তার পরিধানকারীর জেনেটিক কোড পরিবর্তন করার ক্ষমতা দেয়। ফলে পরিধানকারী বিভিন্ন এলিয়েনের আকার নিতে সক্ষম। Omnitrix origin in Bangla | Ben 10
Exploring the Origin of the Omnitrix in Bengali | Ben 10 | Peak Fiction
#Origin
#Omnitrix
বেন টেন এর আরো একটি পর্বে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম। বেন টেন অ্যানিমেশন সিরিজটি কার্টুন নেটওয়ার্কের সবচেয়ে জনপ্রিয় সিরিজগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই সিরিজটির সম্প্রচার শুরু হয় ২০০৫ সালের ২৭শে ডিসেম্বর থেকে। সিরিজটি যারা দেখেছেন তারা অবশ্যই অমনিট্রিক্স এর সাথে পরিচিত। এটি সেই বিখ্যাত ঘড়ি, যার সাহায্যে বেন টেন বিভিন্ন এলিয়েনে রূপান্তরিত হতে পারে। আজকে আমার আলোচনা এই অমনিট্রিক্সকে নিয়ে।
এর আগে এগুলো পড়ে নিতে পারেন:
অমনিট্রিক্স কি?
আজমুথ এবং আলবেডো |
Omnitrix হলো Omni-matrix এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এর স্রষ্টা হলেন গ্যালভান প্রজাতির Azmuth ও Albedo নামের দুইজন বিজ্ঞানী। এই ডিভাইসটি পরিধানকারীর জেনেটিক কোড পরিবর্তন করার ক্ষমতা দেয়। ফলে পরিধানকারী বিভিন্ন এলিয়েনের আকার নিতে সক্ষম।
অমনিট্রিক্স দেখতে অনেকটা হাতঘড়ির মতো। অমনিট্রিক্স এর ডায়াল এর উপর বালুঘড়ির মতো একটি প্রতীক রয়েছে। এটি আসলে ইন্টারগ্যালাক্টিক পিস সিম্বল হিসেবে পরিচিত। এই প্রতীকটি প্ল্যামবারদের ব্যাজেও দেখা যায়।
আজমুথ কেন ওমনিট্রিক্স তৈরি করেছিলেন?
আজমথ প্রধানত দুইটি কারণে এই অমনিট্রিক্স তৈরি করেছেন।
- যাতে এক প্রজাতির প্রাণীরা অন্য প্রজাতির মত জীবন যাপন করতে পারে,তাদের মত জীবনযাপন করে তাদেরকে বুঝতে পারে।এতে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে বিশ্বজগতের শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।
- বিভিন্ন প্রজাতির ডিএনএ সংরক্ষণ করা ,যাতে ভবিষ্যতে কোন প্রাণী বিলুপ্ত হলে তাদের ডিএনএ যেন সংরক্ষিত থাকে।
কিভাবে বেন টেন অমনিট্রিক্স পায়?
আজমথ অমনিট্রিক্স তৈরি করে আশা করেছিলেন যেন গ্যালাক্সির প্রতিটি প্রজাতি যেন একে অপরকে ভালভাবে বোঝার কাজে এটি ব্যবহার করে, নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ঘটিয়ে নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ বিবাদ কমিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে। দুর্ভাগ্যবশত, Vilgax এর মত কেউ কেউ অনুভব করেছিলেন, অমনিট্রিক্স একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে কাজ করতে পারে। তাই তারা এই অমনিট্রিক্সকে পাওয়ার জন্য মাঠে নেমে পড়ে। তাই আজমথ অসন্তুষ্ট হয়ে অমনিট্রিক্স এর শুধুমাত্র একটি প্রোটোটাইপ তৈরি করেন, এবং একাধিক নিরাপত্তা সিস্টেম দ্বারা এটি সজ্জিত করেন। অবশেষে নানা উত্থান পতনের পর, বিভিন্ন হাত ঘুরে এটি পৃথিবীতে পৌঁছায়। যেখানে Ben Tennyson এটির সন্ধান পায়। মূলত অমনিট্রিক্সটি একটি উল্কাপাতের মত পৃথিবীতে পতিত হয়। বেন টেন প্রথমে এটিকে উল্কা মনে করে উৎসুক হয়ে এটির কাছে যায়। অমনিট্রিক্সটি বেন টেনকে দেখা মাত্রই লাফ দিয়ে উঠে তার হাতের সাথে আটকে যায়। এভাবেই বেন অমনিট্রিক্স এর মালিক হয়ে যায় । তখন থেকে বেনের কাছ থেকে এটি কেড়ে নিতে বিভিন্ন ভিলেন নানাভাবে চেষ্টা করতে থাকে, যাদের মধ্যে ভিলগেক্স অন্যতম। যদিও তাদের চেষ্টা বারবার বিফলে যায়। আজমথ ও বুঝতে পারে বেন টেনই কেবল এই অমনিট্রিক্স এর যোগ্য। তাই তিনি বেন টেনকেই এটি দিয়ে যান।
অমনিট্রিক্স কিভাবে কাজ করে?
অমনিট্রিক্স তার পরিধানকারীর জেনেটিক কোড পরিবর্তন করার ক্ষমতা দেয়। ফলে পরিধানকারী বিভিন্ন এলিয়েনের আকার নিতে সক্ষম। সত্যি বলতে অমনিট্রিক্স নিজে ডিএনএগুলো ধারণ করে না। ডিএনএ গুলো ধারণ করে প্রাইমাস নামে একটি আর্টিফিশিয়াল গ্রহ, যেটি আজমথ সৃষ্টি করেছেন। এই গ্রহটিতে সবুজ লাভা প্রবাহকারী একটি আগ্নেয়গিরি আছে, যা ফ্লো অফ ক্রিয়েশন নামে পরিচিত।এতে প্রায় সমস্ত জীবের ডিএনএ স্যাম্পল রয়েছে। এই ডিএনএগুলো সংগ্রহ করে কতগুলো রোবোটিক মশা। অমনিট্রিক্স এই গ্রহটির সাথে আলোর চেয়েও দ্রুত বেগে যোগাযোগ করে ডিএনএগুলো এক্সেস করতে পারে। যত দূরেই বেন যাক না কেন, হোক সেটা অন্য ডাইমেনশন, অমনিট্রিক্স এর সাথে প্রাইমাসের যোগাযোগ কখনো বিচ্ছিন্ন হয় না। এই গ্রহে প্রচুর ডিএনএ স্যাম্পল রয়েছে। যদিও ব্যবহারের সুবিধার জন্য আজমথ ডিএনএগুলো থেকে দশটি দশটি করে এলিয়েনের সেট তৈরি করেছেন। বেনকে প্রথমে এই দশটি এলিয়েন থেকেই তার পছন্দের এলিয়েন বেছে নিতে হত। পরবর্তীতে বেন আরো নতুন নতুন এলিয়েন আনলক করে। পরবর্তী পোস্টে আমি বেন টেন অরিজিনাল সিরিজে দেখানো সর্বপ্রথম দশটি এলিয়েনের সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরব। চলুন দেখে নেই Omnitrix কত শক্তিশালী।
অমনিট্রিক্স এর ফাংশন:
- একটিভ মোড:
ব্যবহারকারী কোন এলিয়েনে রূপান্তর হওয়ার পর সাধারণত এলিয়েন রূপে দশ থেকে পনের মিনিট থাকতে পারে। তবে এখানে মাস্টার কন্ট্রোল নামের একটি ফাংশন রয়েছে। এটি আনলক হলে ব্যবহারকারী যতক্ষণ চায় ততক্ষণ এলিয়েন অবস্থায় থাকতে পারবে। বেন প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর এ ফাংশনটি আনলক করতে পারে। অবশ্য ছোটবেলায় বেন দুর্ঘটনাক্রমে একবার এটি আনলক করে ফেলেছিল।
- টাইম আউট মোড:
অমনিট্রিক্স একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ব্যবহারকারীকে এলিয়েনে পরিণত করে রাখতে পারে, (মাস্টার কন্ট্রোল আনলক হওয়া ব্যতীত)। এরপর আবার ব্যবহারকারী তার আসল রূপে ফিরে আসে। এরপর এটি প্রায় দশ মিনিটের জন্য রিচার্জ হয়। এ সময় অমনিট্রিক্স ব্যবহার করা যায় না।এটিই টাইম আউট মোড। আজমথ এই ফাংশনটি সৃষ্টি করেছিলেন, কারণ যাতে এলিয়েনে পরিণত হয়ে ব্যবহারকারী তার নিজস্ব সত্তা হারিয়ে না ফেলে।
- ক্যাপচার মোড:
যদি অমনিট্রিক্স কোন নতুন ডিএনএ শনাক্ত করতে পারে,সেটিকে এই মোডের সাহায্যে নিজের কাছে নিয়ে ফেলে।
- ধ্বংস মোড:
এটিতে একটি নিজেই ধ্বংস হয়ে যাওয়ার মোড রয়েছে যা ত্রিশ সেকেন্ডের মধ্যে বিস্ফারিত হতে পারে।
অন্যান্য সুবিধা:
উপরোক্ত ফিচারগুলো ছাড়াও আরো কিছু ফিচার এতে দেখা যায়, যেমন :
- এটিতে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স বিদ্যমান। এটি কোন কোন সময় নিজের বুদ্ধিমত্তা খাটিয়ে এলিয়েন ঠিক করতে পারে।
- এটিতে একটি ট্রান্সলেটর যুক্ত রয়েছে ,যা দ্বারা এটি যেকোনো ভাষাকে ট্রান্সলেট করতে পারে।
- এটিকে কেউ ব্যবহারকারীর হাত থেকে খোলার চেষ্টা করলে এটি নিজেকে ডিফেন্সও করতে পারে।
আজ এ পর্যন্তই। কিছু ভুল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি।