ম্যান্ডারিন ১৯২০ সালে চীনের অন্যতম এক ধনী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। Mandarin origin in Bangla | Marvel Comic | Iron Man | Peak Fiction

#Supervillain_origin:

#Mandarin

লিখেছেন : রাফিউল বারি 

ছদ্মনাম ম্যান্ডারিন
নাগরিকত্ব চাইনীজ
লিংগ পুরুষ
উচ্চতা ৬ ফুট ২ ইঞ্চি
ওজন ৯৮ কেজি
চোখ সবুজ
চুল কালো

"Enter if you dare in the presence of The Mandarin" - Mandarin

মার্ভেল কমিক্সের অন্যতম জনপ্রিয় চরিত্র ম্যান্ডারিন এর প্রথম কমিক্সে অভিষেক ঘটে ১৯৬৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে টেলস অফ সাসপেনস এর ৫০ তম ইস্যুতে। চরিত্রটির স্রষ্টা হলেন স্টান লি এবং ডন হেক।
Mandarin origin in Bangla | Marvel Comic | Iron Man | Peak Fiction

অরিজিন:

ম্যান্ডারিন ১৯২০ সালে চীনের অন্যতম এক ধনী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা চেঙ্গিস খানের সরাসরি বংশধর ছিলেন এবং তার মা ছিলেন একজন ব্রিটিশ। উভয়ই ম্যান্ডারিনের জন্মের অল্প কিছুদিন পরেই মারা যান। ম্যান্ডারিন ছোটবেলায় তার চাচীর কাছে থেকে বড় হন। তার চাচী এই দুনিয়ার সবকিছুর উপর বিক্ষুব্ধ ছিলেন। তার এ আচরণ ম্যান্ডারিনের আচরণকে প্রভাবিত করে। ম্যান্ডারিন ছোটবেলাতেই উত্তরাধিকার সূত্রে প্রভুত ধন সম্পদের মালিক হন। উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সম্পদের প্রতিটি অংশ দ্বারা তিনি নিজেকে বিজ্ঞান ও যুদ্ধে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজে ব্যবহার করতেন। এভাবে সম্পদের অপচয় একসময় তাকে দেউলিয়া করে দেয়। ফলে তিনি পারিবারিক সম্পত্তি উপর কর পরিশোধ করতে অক্ষম হয়ে পড়েন। তাকে ও তার চাচীকে নির্বাসিত এবং গৃহহীন করা হয় । এর কিছুদিন পর তার চাচী মৃত্যুবরণ করেন। ম্যান্ডারিন পৃথিবীকে যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়াতে শুরু করেন। তিনি মনে করতে থাকেন,সভ্যতা তার কাছ থেকে সব কিছু কেড়ে নিয়েছে। সভ্যতার প্রতি তিনি প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠেন। যাহোক, যাযাবরের মতো ঘুরতে ঘুরতে একসময় তিনি ভ্যালি অফ স্পিরিট নামের এক উপত্যকার সন্ধান পান।

Mandarin origin in Bangla | Marvel Comic | Peak Fiction

উপত্যকায় তিনি একটি এলিয়েন স্পেসশীপ দেখতে পান। ম্যান্ডারিন অনেক বছর সেখানে থাকেন এবং স্পেসশীপ নিয়ে গবেষণা করেন। স্পেসশীপে তিনি দশটি আংটি পান,যা দ্বারা এ স্পেসশীপটির পাওয়ার সাপ্লাই হতো। এই আংটিগুলো তাকে নানা রকম ক্ষমতা প্রদান করে। তার লক্ষ্য হয়ে ওঠে এই স্পেসশীপের প্রাপ্ত প্রযুক্তি দ্বারা নিজের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং এ ক্ষমতা ব্যবহার করে বিশ্বকে জয় করা এবং শাসন করা। তিনি উপত্যকার চারপাশে স্থানীয় গ্রামগুলোকে জয় করেন এবং তাদের শোষণ করা শুরু করেন। তিনি নিজের সেই দশটি আংটির শক্তি সম্পর্কে আরো ভালভাবে বুঝতে চান। সেগুলো সম্পর্কে জানতে আরো বুদ্ধিমান মানুষের প্রয়োজন।

Mandarin origin in Bangla | Marvel Comic | Peak Fiction

তাই তার কথামত আমেরিকান শিল্পপতি ও আবিষ্কারক টনি স্টার্ক, এবং বিখ্যাত পদার্থবিদ ইয়ান সেনকে অপহরণ করা হয়। তাদেরকে একটি গুহায় বন্ধি করে রাখা হয়। এই বিখ্যাত অপহরণের পরই টনি স্টার্ক হয়ে ওঠেন আয়রন ম্যান। টনিকে বন্ধিদশা থেকে মুক্ত করতে ইয়ান নিজের জীবন উৎসর্গ করেন। আয়রন ম্যান পরবর্তীতে ম্যান্ড্যারিনকে বহুবার পরাজিত করতে সক্ষম হন। আয়রন ম্যান ও ম্যান্ডারিন পরিণত হন চিরশত্রুতে।

পাওয়ার এবং অ্যাবিলিটি 

ম্যান্ডারিন একজন সায়েন্টিফিক জিনিয়াস। এছাড়াও সে একজন দক্ষ মার্শাল আর্টিস্ট। তবে তার প্রধান ক্ষমতার উৎস এলিয়েন শীপ থেকে পাওয়া দশটি আংটি। নিচে এদের ক্ষমতা সম্পর্কে হালকা ধারণা দেওয়া হলো :-

Mandarin origin in Bangla | Marvel Comic | Peak Fiction
  • বাম হাত

Ice Blast Ring

এই রিঙয়ের সাহায্যে ম্যান্ডারিন শক্তিশালী ঠান্ডা প্রবাহ চালনা করতে পারে,যা যে কাউকে নিশ্চল করে দিতে পারে।

  • Mento Intensifier Ring :

ম্যান্ডারিন এ রিঙয়ের সাহায্যে এক বা একাধিক লোককে মানসিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাদের সাথে ম্যান্ডারিন মানসিকভাবে যোগাযোগ করতেও সক্ষম হন।

  • Electro-Blast Ring:

এ রিঙয়ের সাহায্যে ম্যান্ডারিন উচ্চ ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক প্রবাহ সৃষ্টি করতে পারে, যার তীব্রতা ম্যান্ডারিন নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।

  • Flame Blast Ring :

এ রিঙয়ের সাহায্যে ম্যান্ডারিন তাপ অথবা ইনফ্রারেড রশ্মি বিকিরণ করতে পারে।

  • White Light Ring :

এ রিঙয়ের সাহায্যে ম্যান্ডারিন ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক শক্তি বিকিরণ করতে পারে। 

  • ডান হাত:
Mandarin origin in Bangla | Marvel Comic | Peak Fiction

  • Black Light Ring:

এ রিঙ এলাকার সমস্ত আলোকে শোষণ করে অন্ধকারচ্ছন্ন এলাকা তৈরি করতে পারে।

  • Disintegration Beam :

এ রিঙ শক্তিশালী বিম সৃষ্টি করে,যা যেকোনো বস্তুকে ধ্বংস করে দিতে পারে।

  • Vortex Beam : 

এটি শক্তিশালী বায়ু ঘূর্ণি সৃষ্টি করতে পারে।এই বায়ু ঘূর্ণিকে ম্যান্ডারিন ইচ্ছামত চালনা করতে পারে।

  • Impact Beam Ring :

এই রিঙটি ৩৫০ পাউন্ড ডায়নামাইট এর সমপরিমাণ এনার্জি ব্লাস্ট করতে পারে।

  • Matter Rearranger Ring :

 এই রিঙটি একটি বস্তুর অণু এবং পরমাণুকে ইচ্ছামত সাজাতে পারে,অণুগুলোর গতি বাড়াতে বা ধীর করতেও সক্ষম। এছাড়াও এটি কাউকে teleport করতেও সক্ষম। 

পাওয়ার গ্রিড:

মার্ভেলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুযায়ী ম্যান্ডারিন এর ক্ষমতা :

বুদ্ধিমত্তা ০৭/০৭
শক্তিমত্তা ০৫/০৭
দ্রুততা ০৪/০৭
স্থায়িত্ব ০৪/০৭
তেজ ০৭/০৭
আক্রমণ দক্ষতা ০৭/০৭

Mandarin in Cinema :

Mandarin origin in Bangla | Marvel Comic | Peak Fiction

আয়রন ম্যান ৩ দ্বারাই ম্যান্ডারিনের প্রথম লাইভ অ্যাকশন মুভিতে আগমন ঘটে। বেন কিংসলি আয়রন ম্যান ৩ এ ম্যান্ডারিন এর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। সিনেমায় তাকেই প্রথম দিকে ম্যান্ডারিন হিসেবে দেখানো হয়। কিন্তু পরবর্তীতে স্টার্ক যখন তাকে খুঁজে পায়, তখন প্রকাশ পায় যে সবার কাছে পরিচিত "ম্যান্ডারিন" আসলে একটি কাল্পনিক চরিত্র। জনগনের মনে ভয় ধরিয়ে দিতে ম্যান্ডারিন নামের চরিত্রটির সৃষ্টি। ম্যান্ডারিনকে সৃষ্টি করেন অ্যালড্রিচ কিলিয়ান। এজন্য তিনি Trevor Slattery নামের একজন ব্রিটিশ স্টেজ অভিনেতাকে ভাড়া করেন ম্যান্ডারিন হিসেবে অভিনয় করার জন্য। এই ট্রেভরই মুভিতে নকল ম্যান্ডারিনের ভূমিকায় থাকে। মূলত কিলিয়ান ম্যান্ডারিনকে নিজের কভার হিসেবে ব্যবহার করে নিজের অপকর্মগুলো সংঘটিত করত। পরবর্তীতে কিলিয়ান নিজেকে আসল ম্যান্ডারিন বলে দাবি করেন।

Mandarin origin in Bangla | Marvel Comic | Peak Fiction
এই ম্যান্ডারিন টুইস্টটি অনেক ফ্যানের কাছে সমালোচিত হয়। স্বাভাবিকভাবেই কমিকের অন্যতম এই ব্যাডঅ্যাস চরিত্রটির এমন হাল কমিক পড়ুয়ারা মেনে নিতে পারে নি। তাই মার্ভেল তাদের ফ্যানদের খুশি করতে একটি শর্টফিল্ম তৈরি করে, যার নাম All hail the king। এই শর্টফিল্মটি মার্ভেল ওয়ান শট সিরিজের। শর্টফিল্মটিতে দেখানো হয় যে ট্রেভর, যে কিনা ম্যান্ডারিন এর চরিত্রে অভিনয় করেছে,সে এখন জেলে বন্দী।সেখানে জ্যাক নরিস নামের একজন তার সাক্ষাতকার নিতে আসে। এক পর্যায়ে নরিস বলেন তিনি আসল ম্যান্ডারিন এর হয়ে কাজ করেন। তিনি ট্রেভরকে বলেন যে "ম্যান্ডারিন" নামটি ব্যবহার করায় আসল ম্যান্ডারিন ট্রেভরের উপর ক্ষেপে আছেন। তাই তিনি ট্রেভরের সাথে দেখা করতে চান। এরপর ট্রেভরকে জেলখানা থেকে কিডন্যাপ করা হয়। এ শর্টফিল্ম এ প্রমাণিত হয় যে এমসিইউতে সত্যিকারের ম্যান্ডারিনের অস্তিত্ব আছে।

আজ এ পর্যন্তই। কোন ভুল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি।

তথ্যসূত্র : Comic vine, Marvel wiki, Wikipedia